Sunday, 29 May 2016

মোস্তাফিজের হায়দরাবাদ চ্যাম্পিয়ন

মৃদুভাষণ ডেস্ক::লেগ স্ট্যাম্পের ওপরে থাকা ভুবনেশ্বর কুমারের বলটি স্কুপ করে লং লেগ অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠালেন ইকবাল আবদুল্লাহ; কিন্তু উচ্ছাস নেই তার মুখে। মেগা স্ক্রিনে তখন ভেসে উঠলো উল্লাসিত ডেভিড ওয়ার্নারের মুখ। কারণ শেষ বলটি যে ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা! তার আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে শিরোপা লড়াইয়ের জয়-পরাজয়।

নবম আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হলো ওয়ার্নার-মোস্তাফিজের দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। রোববার ফাইনালে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ঘরের মাঠে তাদেরকে ৮ রান হারিয়ে শিরোপা জেতে ওয়ার্নার বাহিনী। ২০৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে কোহলি বাহিনী ৭ উইকেটে করতে পেরেছে ২০০ রান। হায়দরাবাদের এটি প্রথম শিরোপা। অন্যদিকে তৃতীয় বারের মত ফাইনাল খেলেও শিরোপা অধরাই থেকে গেল ব্যাঙ্গালোরের।

ফাইনালে জয়ের মুল নায়ক দলের দুই পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যে ভুবনেশ্বর কুমার ছিলেন এদিন ব্যাটসম্যানদের কাছে সবচেয়ে বড় ধাঁধাঁ। দলের হয়ে বোলিং শুরু করা উত্তর প্রদেশের এই পেসার প্রথম দুই ওভারে গেইল তা-বের মধ্যেও দিয়েছে মাত্র ১১ রান। আর ডেথ ওভারে যখন ম্যাচের ভাগ্য পে-ুলামের মত দুলছে সে সময় দুই ওভারে দেন মাত্র ১৪ রান। কোন উইকেট না পেলেও তার ২৪টি ডেলিভারীরই গড়ে দিয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। তার সাথে মোস্তাফিজুর রহমানও করে দুর্দান্ত বোলিং ৩৭ রানে ১ উইকেট নেন। মোস্তাফিজও ডেথ ওভারে হাত খুলে খেলতে দেননি ব্যাঙ্গালোরের ব্যাটসম্যানদের।

শুরুতে গেইল-কোহলির তা-বে ব্যাঙ্গালোরের জয় সহজ মনে হলেও এই দুই তারকার আউটের মাধ্যমে মাচে ফিরে আসে হায়দরাবাদ। ২০৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে হায়দরাবাদের বোলারদের ওপর টর্নোডো বইয়ে দেন ক্রিস গেইল। মাত্র ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব। বেন কাটিংয়ের বলে আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৭৬ রান করেন গেইল। তার ইনিংসে ছিল ৮টি ছক্কা আর ৪টি চারের মার।

গেইল যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন অনেকটা দর্শক হয়েই ছিলেন বিরাট কোহলি। গেইল আউট হওয়ার পর এতক্ষণ শান্ত মেজাজে থাকা বিরাট কোহলি যেন বুঝতে পারেন এবার তার পালা! একের পর এক বোলারদের কচুকাটা করতে শুরু করেন। তবে ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা কোহলি ১৩ তম ওভারের শেষ বলে ফিরে যান সাজঘরে। এবার ঘাতক বিরেন্দও স্্রান। কোহলির আউটের ঠিক ৬টি বল পরে ফিরে যান আগের ম্যাচের ‘ঘাতক’ এবি ডি ভিলিয়ার্স। আর তখনই ম্যাচে ফিরে আসে হায়দরাবাদ।

ফাইনালে আগে ব্যাট করে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিপক্ষে বড় সংগ্রহ দাড় কড়ায় সানরাইজার্স হয়দরাবাদ। আজও যথারীতি দলকে টেনে নিয়েছে অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই রান মেশিন।

নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাড়িয়েছে ৭ উইকেটে ২০৮। টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ব্যাঙ্গালোরের বোলারদের শাসন করতে থাকেন হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও শেখর ধাওয়ান। ধাওয়ান কিছুটা দেখে শুনে খেললেও দারুণ ফর্মে থাকা ওয়ার্নার ছিলেন আগের মতই ভয়ঙ্কর।

পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৯ রান তোলে হায়দরাবাদ। ওয়ার্নার ৩৮ বলে ৬৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ১৩ তম ওভারে শ্রীনাথ অরবিন্দের বলে ইকবাল আবদুল্লাহর তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ৩টি ছক্কা আর ৮টি চারে সাজানো তার ইনিংস। তবে ডেভিড ওয়ার্নার ফিরে যাওয়ার পর মিডল অর্ডারে যুবরাজ সিং ছাড়া অন্য ব্যাটসম্যানরা পারেননি দলের প্রত্যাশা পূরণ করতে।

যুবরাজ ২ ছক্কা আর ৪ চারে ৩৮ রান করেন ২৩ বলে। শেখর ধাওয়ান করেন ২৫ বলে ২৮ রান। তবে শেষ দিকে বেন কাটিংয়ের ১৫ বলে ৩৯ রানের টর্নেডো ইনিংস দুইশো রান অতিক্রম করতে সাহায্য করেছে দলকে।

ব্যাঙ্গালোরের ইংলিশ পেসার ক্রিস জর্ডান ৪৫ রানে ৩ টি ও শ্রীনাথ অরবিন্দ ৩০ রানে ২ টি উইকেট নিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বড় ঝড়টি গেছে অসি অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনের উপর দিয়ে। তার ৪ ওবারে ৬১ রান নিয়েছে হায়দরাবাদ। ২০ তম ওভারেই ওয়াটসন দিয়েছে ২৪ রান।
f

posted from Bloggeroid


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: