Saturday, 28 May 2016

ক্লান্তি ও ঘুম নিয়ে নামাজ আদায় করার বিধান

সবশেষে বলি, আমাদের উচিত নামাজসহ সকল ইবাদতে প্রাণচাঞ্চল্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সচেষ্ট থাকা। কেননা নামাজে একাগ্রতা অবলম্বন করার মাধ্যমেই বান্দার সঙ্গে মহান মাবুদের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রাসুল (সা.)-এর শিখানো পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমীন। মুসলমানদের জন্য নামাজ আদায় ফরজ। নামাজ শারীরিক ও আত্মিক ইবাদাত। মহানবী (সা.) ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। নামাজসহ ইবাদত বন্দেগিতে যখন ক্লান্তি চলে আসবে তখন বিশ্রাম গ্রহণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন মহানবী (সা.)। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) একবার মসজিদে প্রবেশ করে দেখতে পেলেন, একটি রশি দুটো খুঁটির মাঝখানে বাঁধা আছে। তিনি বললেন, ‘এ রশিটা কিসের জন্য?’ সাহাবিগণ বললেন, ‘এটা জয়নবের রশি।’ তিনি যখন নামাজ পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তখন এ রশিতে ঝুলে থাকেন।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘এটা খুলে ফেল। তোমাদের প্রত্যেকের উচিত উদ্যম সহকারে নামাজ পড়া। আর যখন ক্লান্ত হয়ে যাবে তখন ঘুমিয়ে পড়বে।’ (বুখারি ও মুসলিম) এ হাদিস পাঠে আমরা যে শিক্ষা লাভ করি- ১. এ হাদিসে মধ্যমপন্থা অবলম্বন না করে নিজের প্রতি কঠোরতা আরোপ করার একটি দৃষ্টান্ত রয়েছে। উম্মুল মুমিনীন হজরত জয়নব (রা.) নিজের নিদ্রাভাব দূর করার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন; যেন তিনি বেশি করে নামাজ আদায়ে সক্ষম হন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর এ কাজকে অনুমোদন দেননি। তিনি (সা.) তাঁর উম্মতকে মধ্যমপন্থা অবলম্বন ও কঠোরতা পরিহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ২. যখন কারো নিদ্রা আসে তখন নিদ্রা যাওয়াটা হলো তার কর্তব্য। নফল নামাজের জন্য নিজেকে এতটা কষ্ট দেওয়া উচিত নয়। ৩. অনেককে দেখা যায় নামাজের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লেও নামাজ অব্যাহত রাখেন। এরূপ করা ঠিক নয়। ঘুমের ঘোরে নামাজ, প্রার্থনা বা ইবাদাত-বন্দেগি করতে নিষেধ করা হয়েছে। ৪. নামাজ পড়তে পড়তে যখন ঘুম চলে আসে, তখন মুমিন বান্দার ঘুমও নামাজের ন্যায় ইবাদতের শামিল। সবশেষে বলি, আমাদের উচিত নামাজসহ সকল ইবাদতে প্রাণচাঞ্চল্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সচেষ্ট থাকা। কেননা নামাজে একাগ্রতা অবলম্বন করার মাধ্যমেই বান্দার সঙ্গে মহান মাবুদের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রাসুল (সা.)-এর শিখানো পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমীন। ফয়জুল আল আমীন [ফয়জুল আল আমীন- ধ্রুপদী এক লেখক। পুরো নাম- সৈয়দ মুহম্মদ ফয়জুল আল আমীন। প্রবন্ধ-নিবন্ধ, কলাম, সাহিত্য সমালোচনা, গল্প, গবেষণা, কবিতা, ছড়াসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় যার সুদীপ্ত বিচরণ। দেশের প্রথম শ্রেণির প্রায় সব দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও ছোটকাগজে নিয়মিত লিখছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে তাঁর গুরু হলেন বাবা। আর সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রকৃতি। ইসলাম ধর্মের নানা দিক ও বিষয় নিয়ে সুদীর্ঘ গবেষণা করেছেন ফয়জুল আল আমীন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় রিপোর্টার, ফিচার লেখক, সাব-এডিটর, সহযোগী সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। একাধিক প্রকাশনা সংস্থায় সিনিয়র লেখক, সম্পাদক ও আরঅ্যা-ডি’র প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বর্তমানে পাঠকপ্রিয় একটি সাপ্তাহিকে চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।]


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: