Wednesday, 1 June 2016

নিজেকে মেলে ধরুন

অফিসের এক কর্মী মুখ গুঁজে কাজ করেন সারা দিন। কাজের মানও বেশ ভালো। বছর শেষে দেখা গেল, তাঁর মূল্যায়ন ঠিকভাবে হচ্ছে না। অন্তর্মুখী স্বভাবের কারণে নিজের মনের কথা তাঁর বস বা অন্য সহকর্মীদের বলতে পারেন না। অফিসে সবার মধ্যে থেকেও তিনি আলাদা। অফিসেই নয়, কারও বাড়িতে কোনো দাওয়াত, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁর কথা সবাই ভুলে যান। কর্মীর অন্তর্মুখিতা তাঁকে সমস্যায় ফেলে দেয়। অফিসে মন দিয়ে কাজ করা ভালো। তবে অন্তর্মুখিতা যোগাযোগক্ষমতার একধরনের প্রতিবন্ধকতা। এটি উতরে যেতে না পারলে কর্মজীবনে ঝক্কিতে পড়তে হবে।
প্রতিষ্ঠান অনেক সময় মনে করতে পারে, কেন তারা অন্তর্মুখী কর্মীকে গুরুত্ব দেবে? যিনি নিজের কথাই ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারেন না, তিনি প্রতিষ্ঠানের জন্য কতটুকু কার্যকর। কিছু কিছু কাজ আছে—হিসাব বিভাগে, গবেষণায় কিংবা লেখালেখির কাজে কিছুটা অন্তর্মুখী হলেও চলে। সময়টা যেহেতু নিজেকে প্রকাশ করার, তাই এসব কাজে অন্তর্মুখী না হলেই ভালো।
গ্রো এন এক্সেলের প্রধান নির্বাহী এম জুলফিকার হোসেন বলেন, কর্মজীবনে প্রবেশের আগে অন্তর্মুখী স্বভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে। এক দিনে সম্ভব নয়, কিন্তু চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিন। অফিসের বস ও সহকর্মীদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ৬৫ শতাংশ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অন্তর্মুখী স্বভাবের কারণে নেতৃত্বদানে এগিয়ে যেতে পারছেন না। প্রতিষ্ঠানের কোনো নতুন বিষয় নিয়ে ভাবনা, পরিকল্পনা—এ ধরনের কাজ অন্তর্মুখী স্বভাবের কর্মীরা ভালো করেন।
অন্তর্মুখী স্বভাবের হলে সফলতা আসে না। বিষয়টি এমন নয়। বিল গেটস নিজেকে অন্তর্মুখী ব্যক্তি মনে করেন। কিন্তু তিনি তো বিশ্বসেরা সফল ব্যক্তিদের একজন।
কর্মীর অন্তর্মুখী স্বভাব কাটানোর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের তেমন কিছু করার থাকে না। বস হয়তো তাঁকে এই স্বভাবের দিকটা বুঝে মূল্যায়ন করতে পারেন। কোনো মিটিংয়ে তাঁকে বলার সুযোগ দিতে পারেন। তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কোনো একটা প্রেজেন্টেশন তাঁকে সবার সামনে বলতে দেওয়া যেতে পারে। এ ধরনের নিরীক্ষা খুব বড় কোনো মিটিংয়ে না করে ছোট ছোট মিটিংয়ে করতে পারেন। কিন্তু মনোবিদেরা মনে করেন, এটি থেকে নিজেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিজেকে সময়ের সঙ্গে, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী করে তুলতে হবে। এটি শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তিজীবনেও অনেক কাজে আসবে।

কী করতে পারেন
* নিজের মনের ভাবনা প্রথমে কাছের বন্ধুদের মধ্যে, এরপর সহকর্মীদের বলতে পারেন। নতুন নতুন আইডিয়া মিটিংয়ে বললে আপনার দিকে সবার নজর পড়বে, যা আপনাকে উন্নতির দিকে এগিয়ে দেবে।
* আয়নার সামনে চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। প্রতিদিন পনেরো মিনিট এই চর্চা করতে পারেন।
* নির্দিষ্ট কোনো কারণে আপনি অন্তর্মুখী স্বভাবের হলে সেই কারণ খুঁজে বের করুন। সেটি কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, সে ক্ষেত্রে কাছের কোনো মানুষ বা মনোবিদের সাহায্য নিতে পারেন।
* নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস হারাবেন না। হীনম্মন্যতা থাকলে শুধু পিছিয়েই পড়বেন। কোনো বিষয়ে দক্ষতা কম থাকলে তা শেখার চেষ্টা করুন। দেখবেন, ঠিকই পারছেন

posted from Bloggeroid


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: